শুক্রবার ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ - ১৯:১৩
কোরআন ও ফিলিস্তিনের পক্ষে ইয়েমেনে মানুষের ঢল

কোরআন শরিফের অবমাননার প্রতিবাদ এবং ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি জানাতে ইয়েমেনের রাজধানী সানার সাবঈন চত্বরে আজ শত লাখো মানুষ সমবেত হয়েছেন।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: আজ শুক্রবার ইয়েমেনের রাজধানী সানাসহ দেশের আরও বহু শহরে কোরআন শরিফ অবমাননার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং গাজাবাসীর চলমান দুর্ভোগের প্রতিবাদে ব্যাপক গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ইয়েমেনি গণমাধ্যমগুলোর বরাতে বলা হয়েছে, “কোরআন ও ফিলিস্তিনের সহায়তায় প্রস্তুত”—এই স্লোগানকে সামনে রেখে আজ সারা দেশে লাখো, এমনকি মিলিয়নেরও বেশি মানুষ রাজপথে নেমে আসে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডিয়ারবর্ন শহরে কয়েকজন ইসলামবিদ্বেষী কর্মী ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’র অজুহাতে কোরআন শরিফ অবমাননার চেষ্টা চালায়। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে তাদের তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতির অবনতি ঘটে যখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক রাজনৈতিক কর্মী জেক লং সেখানে উপস্থিত হয়ে প্রকাশ্যে কোরআন অবমাননার চেষ্টা করে।

ডিয়ারবর্ন শহরটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ মুসলিম জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল। সাম্প্রতিক সময়ে শহরটি ইসলামবিদ্বেষী তৎপরতার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এর আগেও সুইডেন ও ডেনমার্কসহ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’র নামে কোরআন শরিফ অবমাননার অনুমতি দিয়েছিল।

সানায়ায় অনুষ্ঠিত আজকের সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা এক বিবৃতিতে কোরআন শরিফের প্রতি তাদের অটল আনুগত্য পুনর্ব্যক্ত করেন এবং এই পবিত্র গ্রন্থের প্রতি যেকোনো ধরনের অবমাননা ও আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, কোরআন শরিফ অবমাননার ধারাবাহিক ও সংগঠিত প্রচেষ্টা ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর ধর্মীয় মূল্যবোধের বিরুদ্ধে পরিচালিত একটি বিস্তৃত সায়োনিস্ট যুদ্ধের অংশ। সমাবেশকারীরা জোর দিয়ে বলেন, এসব ঘটনা বিচ্ছিন্ন বা ব্যক্তিগত আচরণ নয়; বরং এটি একটি সুপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকল্পের অংশ।

মিলিয়ন মানুষের এই জমায়েতে অংশগ্রহণকারীরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সায়োনিস্ট ইসরায়েলি শাসনব্যবস্থাকে কোরআন অবমাননার জন্য প্রত্যক্ষভাবে দায়ী করে বলেন, এসব কর্মকাণ্ড ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি তাদের গভীর বিদ্বেষ ও শত্রুতারই বহিঃপ্রকাশ।

বিবৃতির আরেক অংশে ইয়েমেনের জনগণ সমগ্র মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহ্বান জানান—কোরআন অবমাননার ঘটনায় ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানাতে সচেতন ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য, সর্বস্তরে প্রস্তুতি ও গণসংহতি জোরদার করার জন্য এবং এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে নীরব না থাকার জন্য।

সমাবেশকারীরা মার্কিন ও সায়োনিস্ট পণ্য বর্জনের ওপরও জোর দেন এবং বলেন, এসব পণ্যের ব্যবহার অব্যাহত রাখা শত্রুদের অপরাধ ও আগ্রাসনে পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণের শামিল।

বিবৃতির শেষাংশে ইয়েমেনের জনগণ কোরআন শরিফ ও ইসলামি পবিত্রতা রক্ষায় সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও গণমাধ্যমভিত্তিক সর্বাত্মক প্রতিরোধকে সবার দায়িত্ব বলে ঘোষণা করেন।

সানার পাশাপাশি সাদা, হুদাইদা, ধামার, ইমরান, মারিব, তায়েজ ও হাজ্জা প্রদেশের আরও কয়েক ডজন শহরেও আজ ব্যাপক জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha